ব্রহ্মপুত্রে নাব্য সংকট তীব্র
ব্রহ্মপুত্র নদে অস্বাভাবিক
হারে পানি কমে যাওয়ার কারণে নদের নাব্যতা সংকট তীব্র রূপ নিয়েছে। সেই সাথে
নদের বুক চিরে জেগে উঠেছে অসংখ্য চর-ডুবোচর। পানির স্বাভাবিক গতি প্রবাহ না
থাকায় যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী নৌকা চলাচল মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। পণ্যবাহী ও
যাত্রীবাহী নৌকা চলাচল করতে গিয়ে নদের মাঝপথে আটকে যাচ্ছে। ফলে রৌমারী ও
রাজীবপুর থেকে চিলমারী, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা নৌরুট হুমকির মুখে পড়েছে। যে
কোনো সময় নৌপথ বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে।
নৌকার মাঝি ও মালিকরা জানান, নদীর পানির প্রবাহ সচল রাখতে বেশ কিছু স্থানে
ড্রেজিং করা প্রয়োজন। ড্রেজিং করা না হলে যে কোনো মুহূর্তে নৌপথ বন্ধ হয়ে
যেতে পারে। রৌমারী ও রাজীবপুর থেকে চিলমারী, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা নৌ
যোগাযোগ বন্ধ হলে এলাকায় জ্বালানি তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম
বেড়ে যাবে। যার কারণে অর্থনৈতিক প্রভাব পড়বে।
সরেজমিনে ব্রহ্মপুত্র নদে গিয়ে দেখা গেছে, নদের চারপাশে অসংখ্য বালিচর ও
ডুবোচর জেগে উঠেছে। যে দিকে চোখ যায় খালি বালি আর বালি। পানি অস্বাভাবিক
হারে কমে যাওয়ার কারণে নদ হারিয়ে ফেলেছে তার স্বাভাবিক স্রোতধারা। নদে
স্রোতের প্রবাহ না থাকায় নৌকা চলাচল করতে গিয়ে ডুবোচরে আটকে যাচ্ছে। তখন
নৌকার মাঝি মাল্লারা নদীতে নেমে ঠেলে নৌকা পার করছে। অনেক মানুষ নদী পাড়
হচ্ছে পায়ে হেঁটে।
রাজীবপুর নৌকা ঘাট থেকে চিলমারী ও গাইবান্ধা নৌরুটে যাত্রীবাহী নৌকা চালায়
সাইরুদ্দিন (৩০)। তিনি বলেন, ‘রাজীবপুর ঘাট থেকে চিলমারী যাইতে ২০ স্থানে
নৌকা ঠেইকা ধরে। তহন ঠেলা দিয়া নৌকা পাড় করা নাগে।’
তিনি আরো জানান একই অবস্থা গাইবান্ধা যাইতেও। রৌমারী ঘাট থেকে কুড়িগ্রাম
নৌকা পর্যন্ত যাত্রীবাহী নৌকা চালান আব্দুস সালাম। তিনি বলেন ‘এবা কইরা
নৌকা চালান যাবো না। মেলা জায়গায় নৌকা ঠেইকা ধরে। মনে হয় দু’একদিন গেলে
যাওয়া যাবো না।’
নৌকা ব্যবসায়ী তৈয়ব আলী জানান, এখন নির্দিষ্ট কোনো নৌকা ঘাট নেই। নদীতে
পানি না থাকায় চর পড়েছে। ফলে বালি চর পায়ে হেঁটে নৌকায় উঠতে হয়। চিলমারী
ভাসমান তেল ডিপোর ওপর নির্ভরশীল রৌমারী রাজীবপুর উপজেলা। নদী পথ বন্ধ হয়ে
গেলে জ্বালানি সংকট দেখা দিবে। কারণ নদী পথেই জ্বালানি তেল আনা হয়।
নৌকা ব্যবসায়ী ও মাঝিরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে নদী ড্রেজিং এর দাবি
জানান। এই রুটে নিয়োমিত চলাচলকারী নজরুল ইসলাম জানান, নদীতে পানি কম থাকার
কারণে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা যেতে আগের চেয়ে অনেক সময় বেশি লাগে। তিনি এই
নদী পথ গুলোতে ড্রেজিং করার দাবি জানান।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু তাহের
জানান, ব্রহ্মপুত্র নদে ড্রেজিংয়ের একটি প্রস্তাব উর্ধ্বতন কর্র্তপক্ষের
কাছে পাঠানো হয়েছে।
লেখাটি এর আগে এখানে প্রকাশিত: http://www.dhakatimes24.com/index.php?view=details&data=University&news_type_id=1&menu_id=1&news_id=24906
No comments:
Post a Comment